Asishbiswas
Asishbiswas
May 28, 2025
এই কলি যুগে মানুষের ধর্ম কি ? যুগধর্ম কি ?
1 answers
13 views
1
Answer
Login
Asishbiswas
Asishbiswas
May 28, 2025

এই কলি যুগে মানুষের ধর্ম কি ? যুগধর্ম কি ?

যুগধর্ম হল যুগের ধর্ম। আমাদের

চারটি যুগ রয়েছে যথাঃ- সত্যযুগ,

ত্রেতাযুগ, দ্বাপরযুগ ও কলিযুগ। বর্তমান

সময় কলিযুগের অর্ন্তভুক্ত । প্রত্যেক

যুগে ভগবানকে সন্তুষ্টি বিধানের জন্য

আলাদা ভাবে ধর্মানুষ্ঠান করা হত। এ

সম্ভন্ধে শ্রীমদ্ভাগবতের (১২/৩/৫২

শ্লোকে) শুকদেব গোস্বামী পরিক্ষিত

মহারাজকে বলেন -

“কৃতে যদ্ধ্যায়তো বিষ্ণুং ত্রেতায়াং ঘজতো মখৈঃ।

দ্বাপরে পরিচর্যায়াং কলৌ তদ্ধরিকীর্তনাৎ

।। ”

অর্থাৎ, সত্যযুগে বিষ্ণুকে ধ্যান করে,

ত্রেতাযুগে যজ্ঞের মাধ্যমে যজন

করে এবং দ্বাপর যুগে অর্চন

আদি করে যে ফল লাভ হত,

কলিযুগে কেবলমাত্র “ হরেকৃষ্ণ

মহামন্ত্র” কীর্তনে সেই সকল ফল লাভ

হয়। অর্থাৎ, সত্যযুগে যুগধর্ম ছিল ভগবান বিষ্ণুর ধ্যান করা। ধ্যানের

মাধ্যমে ভগবানের সন্তুষ্টি বিধানের

প্রয়াস করা হত। বৈদিক

শাস্ত্রমতে ধর্মের চারটি স্তম্ভ যথাঃ-

সত্য, দয়া, তপ ও শৌচ। সত্যযুগে এই

চারটি স্তম্ভই বর্তমান ছিল। তখন

চারভাগ ধর্ম ছিল এবং মানুষের

আয়ুষ্কাল ছিল ১ (এক) লক্ষ বছর।

ভগবানকে সন্তুষ্টি করার জন্য হাজার

হাজার বছর ধ্যান (তপস্যা) করা হত।

ভগবানকে লাভ করা খুবই কষ্ঠসাধ্য ছিল।

ত্রেতাযুগে যুগধর্ম ছিল যজ্ঞের

মাধ্যমে ভগবানের সন্তুষ্টি বিধান

করা। বিভিন্ন রকমের উপাদান যজ্ঞের

অগ্নিতে আহুতির মাধ্যমে ভগবানকে আহবান করা হত। যজ্ঞে বিভিন্ন প্রকার বৈদিক মন্ত্র উচ্চারিত হত। এই যুগে তিন ভাগ ধর্ম এবং এক ভাগ অধর্ম ছিল। মানুষের আয়ু ছিল ১০ (দশ) হাজার বছর। দ্বাপরযুগে যুগধর্ম ছিল অর্চন। এ যুগে দুই ভাগ ধর্ম ও দুই ভাগ অধর্ম ছিল। মানুষের আয়ুস্কাল ছিল ১ (এক) হাজার বছর। মানুষ অর্চনের মাধ্যমে ভগবানকে সন্তুষ্ট করার জন্য চেষ্টা করত।

কলিযুগের যুগধর্ম হচ্ছে নাম সংকীর্তন

করা। কলিযুগে তিন ভাগ অধর্ম এবং এক

ভাগ ধর্ম। মানুষ অল্প আয়ূ, অল্প

মেধা,কলহ প্রিয়, এবং অধার্মিক। কিন্তু

কলি যুগে সবচেয়ে বড় আশীবাদ হল খুব

অল্পতেই হরিনাম সংকীর্তন করার

মাধ্যমে ভগবানকে লাভকরতে পারা যায়।

চৈতন্যচরিত্রামৃতে বর্ণনা হয়েছে - “

কলিকালে নামরূপে কৃষ্ণ অবতার। নাম

হৈতে হয় সর্বজগৎ নিস্তার ।।” এই

কলিযুগে ভগবানের দিব্যনাম “ হরে কৃষ্ণ

মহামন্ত্র ” হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণের অবতার।

কেবলমাত্র এই দিব্যনাম গ্রহন করার

ফলে, যে কোন মানুষ সরাসরিভাবে ভগবানের সঙ্গ লাভ করতে পারেন। যিনি তা করেন তিনি অবশ্যই জড় জগত থেকে উদ্ধার লাভ করেন। এই নামের প্রভাবেই কেবল সমস্ত জগৎ নিস্তার পেতে পারে। অন্যান্য যুগে অনেক বছর সাধনার. ফলে যা লাভ হতো না, কলিযুগে শুধুমাত্রনিরন্তন হরিনামের

মাধ্যমে তা অতি সহজেই লাভ হয়।

কলিযুগে অধর্মের পরিমান বেশী থাকার

ফলে শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য মহাপ্রভুর

উদারতার ফল স্বরূপ কলির পতিত জীব খুব স্বল্প প্রয়াসে ভগবানকে লাভ করছে।

কলির প্রথম সন্ধ্যায় মহাপ্রভু কলির

পাপাহত জীবদের মুক্তির বিধানের জন্য

নবদ্বীপে আবির্ভূত হন এবং সর্বত্র

হরিনাম দান করেন এবং তিনি ভবিষ্যৎ

বানী করেন - “ পৃথিবীতে আছে যত

নগরাদি গ্রাম সর্বত্র প্রচার হইবে মোর এই নাম।” তার ধারাবাহিকতায় মহাপ্রভু

আর্দশকে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে গুরুর

আদেশকে অন্তরে লালন করে কৃষ্ণকৃপাশ্রীমূ র্তি শ্রীল অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ

সারা বিশ্বব্যাপি যুগধর্ম প্রতিষ্ঠার

লক্ষ্যে ইস্কন প্রতিষ্ঠা করেন। হরে কৃষ্ণ ।